৫জি কি? ৫জি এর সুবিধা কি? বাংলাদেশে ৫জি নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে?
৫জি কি? ৫জি এর সুবিধা কি? বাংলাদেশে ৫জি নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে?
আমাদের আজকের পর্বের মূল বিষয় হচ্ছে 5g নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আপনি যদি আমাদের আজকের পর্বটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারেন তাহলে জানতে পারবেন বাংলাদেশের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে 5 জি এর পূর্ণরূপ কি 5g নেটওয়ার্ক মূলত কি পৃথিবীর কোন দেশে প্রথম ফাইভ জি চালু করা হয় ইত্যাদির প্রশ্নর উত্তর থাকছে আমাদের আজকের পর্বে আজকে পর্বে অনেক ইন্টারেস্টিং হতে চলেছে আপনি ভালভাবে আজকের পর্ব পড়লে তাহলে নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে অনেক কিছু আপনি জেনে যাবেন চলুন শুরু করা যাক।
পৃথিবীর সব জিনিসের মত পরিবর্তিত হয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক গুলো অনেক পরিবর্তন এসেছে প্রতিনিয়ত মোবাইল নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করেছি। সেলুলার টেকনোলজি গুলোর নাম হিসেবে বিভিন্ন টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করা হলেও।
কিন্তু যাতে করে সাধারন মানুষ খুব সহজে বুঝতে পারে এগুলো সম্পর্কে এগুলোকে বিভিন্ন প্রজন্ম বা জেনারেশনে ভাগ করা হয়। যাতে করে খুব সহজে সাধারণ মানুষ এই নাটকগুলো সম্পর্কে বুঝতে পারে।
যেমন মোবাইল নেটওয়ার্ক গুলোর মধ্যে প্রথম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক এবং তৃতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক কিন্তু এগুলোকে সংক্ষেপে যাতে করে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে তাই অনেক সংক্ষিপ্ত রূপ দেয়া হয় যেমন 2g 3g 4g।
সারা পৃথিবীর মানুষ 4g নেটওয়ার্কের সুবিধা ভোগ করতেছে। এমনকি আমরা যারা বাংলাদেশে বসবাস করে তারা প্রত্যেকে ফোরজি নেটওয়ার্ক এর সুবিধা নিতে পারতেছি।
তবে আশা করা যায় কয়েক বছরের মধ্যে এমনকি এর আগেও আমরা ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের সুবিধা নিতে পারব কারণ ইতোমধ্যে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক এর বিভিন্ন কার্যক্রম সংঘটিত হয়েছে।
আমরা যারা বাংলাদেশে বসবাস করি তারা 2018 সালে ফোরজি নেটওয়ার্ক এর অন্তর্ভুক্ত হয় এবং 2018 সাল থেকে আমরা 4g নেটওয়ার্কের সুবিধা উপভোগ করতে পারতেছি।
কিন্তু আশা করা যায় আগামী 2021 এবং 2022 সালের মধ্যে খুব সহজেই আমাদের কাছে পৌঁছে যেতে পারে ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক।
5g মোবাইল নেটওয়ার্ক যেহেতু একটা নতুন প্রযুক্তি তাই আমাদের মাঝে এর আগ্রহের কমতি নেই চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক 5g নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং 5g নেটওয়ার্ক সম্পর্কে সুবিধা ও অসুবিধা গুলি কি।
৫জি কি? – What is 5G?
5g নেটওয়ার্ক হচ্ছে একটা পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক কততম যেহেতু এখন ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতেছি এটি হচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তেমনি ভাবে আমরা যখন 5g নেটওয়ার্ক এর আওতাভুক্ত হব তখন এটা হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক।
স্বাভাবিকভাবে বলাই যাই আমরা যেহেতু এখন ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতেছি এই ফোরজি নেটওয়ার্ক থেকে 5g নেটওয়ার্ক অনেক অনেক গতি সম্পন্ন হবে।
আমাদের আজকের এই পর্বে j5j নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে তা হচ্ছে সেলুলার ডিভাইসে ব্যবহৃত 5g মোবাইল নেটওয়ার্ক আরো আগে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মধ্যে 5g নেটওয়ার্ক এর উদ্ভাবন হয়ে গেছে ইতোমধ্যে আমরা সবাই ব্যবহার করতেছি।
5G কতটা দ্রুতগতির হবে? ৫জি এর স্পিড কেমন হবে?
5g সাধারনত ফোরজি নেটওয়ার্ক থেকেও অনেকে স্পিড সম্পূর্ণ হবে। বর্তমানে আমাদের সবার হাতে যে স্মার্টফোনগুলো রয়েছে সেই স্মার্টফোনগুলোতে বেশিরভাগ মোবাইলে 4g কানেক্ট করে। আপনি কি একটা জিনিস কখনো খেয়াল করেছেন আপনি আপনার মোবাইল নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইন্টারনেট স্পিড পেয়ে থাকেন।
কিন্তু মোবাইল 4g এমনকি সিম যেটা কানেক্ট করা আছে সেটাও 4g তাহলে কিন্তু তারপরও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইন্টারনেট স্পিড। তেমনি ভাবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সিম অবস্থা হবে তবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক 4g নেটওয়ার্ক থেকেও দশগুণ বেশি গতিসম্পন্ন হবে।
আপনাদেরকে একটা উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে বলা যাক আপনি যদি এখন একটা দুই ঘন্টা ওয়ালা ভিডিও ডাউনলোড করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে যেতে পারে 7 থেকে 10 মিনিট পর্যন্ত কিন্তু আপনার মোবাইলটি যদি ফাইভ-জি কানেক্ট থাকে অর্থাৎ 5g ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকে তাহলে আপনি সেই দু'ঘণ্টার ভিডিও মাত্র 10 সেকেন্ডে ডাউনলোড করতে পারবেন।
বিভিন্ন মোবাইল ডিভাইসে পরীক্ষাতে ১ থেকে ১.৫ গিগাবিট পর্যন্ত স্পিড পাওয়া গেছে। কিন্তু তার পরেও এটা বর্তমানের ৪জি এর চেয়ে অনেক অনেক বেশি দ্রুতগতিসম্পন্ন। ফাইভ’জি এর গড় গতি হতে পারে ১০০ Mbps এর চেয়ে বেশি।
৫জি এর সুবিধাগুলো কি?
চলুন জেনে নেওয়া যাক ফাইভ-জি এর সুবিধা গুলো কি কি। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক এর ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখা দিবে।
ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক আসলে শুধুমাত্র ইন্টারনেটে ভিডিও এবং অন্যান্য ডাউনলোড কাজকর্ম ভালভাবে করা যাবে তা না বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রেও অনেক বিশাল পরিবর্তন দেখা দেবে।
5G ব্যবহার করে বিশ্বের যোগাযোগ এবং শিল্প ব্যবস্থায় বিশাল পরিবর্তন আসবে। এটা শুধুমাত্র মুভি দেখার জন্যই না, বরং ৫ জি এর জগত আরও অনেক বড়।
দ্রুত ডাউনলোড
আমরা যখন শুনতে পাই 5g ইন্টারনেট সংযোগ এর সুবিধা আসবে তখন আমাদের মাথায় সর্বপ্রথম যে সুবিধার কথা মনে আসে তা হচ্ছে দ্রুত ডাউনলোড।
তা অবশ্য ঠিক ফোরজি নেটওয়ার্ক এর তুলনায় ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক এর সময় 12 ঘণ্টার ফুল এইচডি মুভি আপনি কয়েক মিনিটে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন যেটা বর্তমানে ফোরজি নেটওয়ার্ক এর সময় কল্পনাও করা যায় না।
এছাড়াও আপনি কয়েক গিগাবাইট এর সফটওয়্যার অথবা ভিডিও ডাউনলোড করার সময় আগের মতো আপনাকে আর ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে না এখন এক নিমিষেই কয়েক গিগাবাইটের সফটওয়্যার অথবা ভিডিও ট্রানস্ফার করে ফেলতে পারবেন এবং ডাউনলোড করে ফেলতে পারবেন।
বাফারলেস স্ট্রিমিং
বর্তমান যুগ হলো স্ট্রিমিং এর যুগ। একসময় মানুষ শুধু ভিডিও স্ট্রিমিং এর কথা ভাবলেও গুগল এর স্ট্যাডিয়া এর মতো প্লাটফর্ম ভিডিও গেমকেও স্ট্রিমিং এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
5 জি এর ক্ষেত্রে লো ল্যাটেন্সির জন্য ভিডিও গেম খেলার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তখন আপনার মোবাইল বা পিসিতে ডাউনলোড না করেই হাই-প্রোফাইল সব গেম খেলতে পারবেন।
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গেমিং পিসি ছাড়াই যেকোনো পিসিতে গেম খেলা যাবে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে আপনি গেম স্ট্রিম করেই খেলতে পারবেন।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিই হলো ভবিষ্যৎ। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিংবা অগমেন্টেড রিয়েলিটির এক্সপেরিয়েন্স নেয়া ৫জির কল্যাণে আরো সহজ হয়ে যাবে।
সেই সাথে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে রোবটের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার এর মত কাজগুলো আস্তে আস্তে আরো প্রচলিত হবে।
তখন একজন ডাক্তার তার চেম্বারে বসেই রোবোটিক আর্ম ব্যবহার করে দূরের কোনো অপারেশন থিয়েটারে থাকা রোগীর অপারেশন করতে পারবেন। ৫জি এর উচ্চগতি এবং আলট্রা-লো-ল্যাটেন্সি এই সুবিধা করে দিবে।
পাওয়ার এফিশিয়েন্ট
৫জি নেটওয়ার্ক সমর্থিত মোডেম চিপগুলো আগের চেয়ে অনেক পাওয়ার এফিশিয়েন্ট করা হয়েছে। এর ফলে মোবাইল ডিভাইসে ফাইভজি প্রযুক্তিতে নেট ব্যবহার করলে চার্জ অনেক কম খরচ হবে। মোবাইল চার্জ করা নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা এটি অনেকাংশেই কমিয়ে দিবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ৫G ফোনগুলোর ব্যাটারির চার্জ আরও বেশি দীর্ঘস্থায়ী হবে। অবশ্য নকিয়া ইতোমধ্যেই জানিয়েছে যে 5G নেটওয়ার্ক ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে। সময়ের সাথে আমরা আরো ভাল কিছু আশা করতেই পারি!
স্বয়ংক্রিয় গাড়ি
ড্রাইভারবিহীন গাড়ি ইতোমধ্যেই রাস্তায় চলছে। তবে ৫জি এলে এগুলোর প্রসার আরো বাড়বে। ফাইভ জি নেটওয়ার্কের দ্রুত গতি এবং আলট্রা-লো-ল্যাটেন্সির কারণে গাড়িগুলো নিজের/স্থানীয় নেটওয়ার্ক এবং সার্ভারের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করে আরও নির্ভুলভাবে চালিত হতে পারবে।
বাংলাদেশে ৫জি নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে?
আমরা এতক্ষণ ধরে জানলাম ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে এবং 5g নেটওয়ার্ক এর সুবিধা গুলো সম্পর্কে। এতক্ষণে আমাদের মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশে ৫জি নেটওয়ার্ক কবে চালু হবে। বাংলাদেশ 2021 সালের লাস্টের দিকে হয়তো ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক আসতে পারে তবে 2021 সালে না আসলেও 2022 সালে আমরা আশা করতে পারি। ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেকগুলো দেশে 5g নেটওয়ার্ক সংযুক্ত হয়ে গেছে তাই আমরা আশা করতে পারি খুব শীঘ্রই আমরা ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সংযুক্ত হয়ে যাব।