কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেছেন পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার তথ্য তারা পেয়েছিলেন জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ এর মাধ্যমে এবং এ ঘটনার জের ধরে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে শহরে।
মিস্টার হাসান বলেন ঘটনার আবার যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য শেয়ার করে উস্কানিমূলক তথ্যগুলো শেয়ার করা হচ্ছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটার পর এরপর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য শেয়ার করার মাধ্যমে মানুষদেরকে বিভ্রান্তি মুখে ফেলে দিচ্ছে এমন তথ্য জানান তিনি। বিকেলে এসব ঘটনা বিবিসিকে বলেন।
এদিকে কুমিল্লা শহরে পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফের পাওয়ার পর কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় পূজামণ্ডপগুলোতে ভাঙচুর করেছেন এমন তথ্য জানিয়েছেন এমন তথ্য জানিয়েছেন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নির্মল পাল।
তিনি বলেন শহরের নানুয়ারদীঘি এলাকার একটি পূজামণ্ডপের প্রতিমায় কোরআন শরীফ পাওয়ার পর এমন ঘটনা যখন পুলিশ জানতে পারে তখন সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে নিয়ে সেটা সংগ্রহ করে। কিন্তু কুমিল্লায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপ গুলোতে ভাঙচুরের চেষ্টা করে একদল লোক।
কি ঘটেছিলো পূজামণ্ডপে?
জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তারা জানান সকাল বেলা অর্থাৎ ভোরবেলা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ একটি জরুরি কল আসে যেখানে বলা হয়। যে নানুয়ারদীঘির পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রতিমার পায়ের কাছে একটি কোরআন রাখা আছে।
জাতীয় সেবা থেকে প্রাপ্ত কল পাওয়ার পর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে খুব শীঘ্রই হাজির হয়ে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর প্রথমে সেখান থেকে কোরআন সংগ্রহ করেন।
এই ঘটনাটি সাধারণত সকালের দিকে ঘটেছে কিন্তু দশটার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একটি ছবি প্রচুর পরিমাণে বাইরের হতে থাকে যেখানে দেখা প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরআন।
সাথে যাতে গঠনের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেলে এবং বিভিন্ন ইসলামিক মিডিয়া গুলো সাথে সাথে ছবিটিকে নিয়ে বিভিন্ন রকম লাইভ ভিডিওসহ ইত্যাদি ছবি শেয়ার করতে থাকেন।
নাম প্রকাশ করতে চান না এরকম একজন স্থানীয় ব্যবসায়ীর সাথে যখন বিবিসির কথা হয় তখন সে ব্যক্তিটি জানায় বেলা 11 টার দিকে কোরআনের অবমাননা এমন ঘটনা পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আমাদের সাথে যখন কথা বলে তিনি জানান নানুয়ারদীঘির মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা করা হয়েছে তখন সাথে সাথে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন পুলিশ বাহিনী এসে কোরআনটি সরিয়ে নেয়।
কিন্তু ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ সংস্থা নিয়োগ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এমন ঘটনা শুনে বিভিন্ন ধর্মপ্রাণ ইসলামিক ভিডিওগুলো এবং ধর্মপ্রাণ বিভিন্ন ব্যক্তিরা এই নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করে। এক পর্যায়ে যখন মানুষ কোরআনকে অবমাননার দায়ে পূজামণ্ডপগুলোতে। হামলা করার চেষ্টা করে তখন পুলিশ সেখানে ব্যবস্থা নেই।
এদিকে কিন্তু ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায় এবং বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল এবং বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে সেগুলো লাইভ সম্প্রচার করা হয়। এটাই স্বাভাবিক ধর্মে আঘাত আনলে কোন ধর্মপ্রাণ মুসলিম সেটা গ্রহণ করতে পারবে না তারা প্রতিবাদ করবে।
পূজা উদযাপন পরিষদ যা বলছে
পূজা উদযাপনের জন্য যাতে করে তারা ভালোভাবে পূজা পরিচালনা করতে পারে সে জন্য তারা একটি পরিষদ গঠন করেন কুমিল্লা জেলা পরিষদের সম্পাদক নির্মল পাল বলেন ঘটনাটি বোর বেলার দিকে সংঘটিত হয়।
তিনি জানান পূজা যাতে করে সুন্দরভাবে সংঘটিত না হয় সে জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরআন রেখে এই ঘটনাটি ঘটে তারা এখন বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন বিক্ষোভ করছে। তারা ইতিমধ্যে কয়েকটি পূজামণ্ডপে আমরা সার্থক করেছে কিন্তু তারা পুলিশের বাধায় পূজামণ্ডপের ভিতরে ঢুকতে না পারলেও কিন্তু তারা গেট বা পূজা মণ্ডপের সামনে যে স্থাপনাগুলো রয়েছে সেগুলো ভাঙচুর করেছে এমন টা বলেন বিবিসি নিউজ জিজ্ঞাসাবাদে।
এই দিকে কিছু হিন্দু নেতারা জানান প্রতি বছরই কুমিল্লাতে এ পূজা উদযাপন পালন করা হয় এবারও বিভিন্ন পূজা মন্ডপ খুব বড় ধরনের উদযাপন পালন হচ্ছিল কিন্তু একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার দায়ে পুজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা তাদের মূর্তিকে বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে এমনটা জানা তারা।
এদিকে তারা আরো একটা কথা জানান পূজা বিধি একটি মিছিল বাহির হলে ওদের সাথে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে সংঘর্ষ হয়। কিন্তু এই ঘটনার কোনো সত্যতা মিলেনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে তারা বলেন এমন ঘটনা ঘটেনি।
কুমিল্লার সর্বশেষ অবস্থা কেমন
এদিকে আমাদেরকে জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুজ্জামান জানান পুরো শহর তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে যাতে কোনরকম ঘটনা সৃষ্টি না হয় তারা সেদিকে খেয়াল রাখবেন
শহর নিয়ন্ত্রণে পুলিশ র্যাব বিজিবি সহ বিভিন্ন বাহিনী সংরক্ষিত আছে এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে নতুন করে এখন কোন রকম ভাংচুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ঘটেনি।
এদিকে পূজা উদযাপন নেতারা ভয়ে রয়েছেন কারণ তারা জানান বিভিন্ন পূজা বিরোধী মিছিল এর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক লোকেরা একত্রিত হয়েছে । তাই ঘটনা কখন কোন দিকে যায় সে ব্যাপারে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত না।
মন্দিরে কোরআন রেখেছে কারা
মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ কে বা কারা রেখেছেন এ ব্যাপারে পুলিশ এখনও কোন তথ্য জানতে পারেননি তবে তারা বলেন আমরা এ ব্যাপারে এখনও তদন্ত করছি।
এদিকে আমাদেরকে জানান জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুজ্জামান তিনি বলেন পূজামণ্ডপে কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরীফ কে রেখেছেন সে সম্পর্কে আমরা এখন অবগত নয়। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করেছি যারা এই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন এবং সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। এবং তার সাথে আমরা বিভিন্ন এজেন্সির সাথে সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন খবরা-খবর নিচ্ছি আশা করি আমরা কে বা কারা এ ঘটনাটি করেছে তা আমরা বের করতে পারব।
তিনি আমাদেরকে আরো বলেন এখন আমরা নিশ্চিত নই, কারা এ ঘটনাটি ঘটাতে পারে, এবং সন্দেহ করে কাউকে দোষ দেওয়াটা ঠিক হবে না তদন্ত করে আমরা সঠিক অপরাধীকে চিহ্নিত করতে পারো- তার জন্য আমরা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে তিনটি তদন্ত দল গঠন করেছি তারা ঘটনাটি তদন্ত করছেন এবং পুলিশ আলাদাভাবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখতেছে এদিকে আমরা বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি যাতে করে আমরা মূল অপরাধীদের ধরতে পারি।
আমাদের ধারণা এ ঘটনার সাথে কোন দল সংযুক্ত থাকতে পারে একার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব না কয়েকজন মিলে কাজ করতে পারে এমনটা আমাদের সন্দেহ তবুও আমরা ঘটনাটি যাচাই করে দেখছি। আপাতত আমরা চাচ্ছি শহরটি শান্তিপূর্ণ থাকুক।
আমাদেরকে বিভিন্ন জন আরও বিভিন্ন তথ্য দেন, তারা বলেন এর আগেও কুমিল্লা শহরে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছিল কিছুদিন আগেও হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এ সকল ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত এখন পর্যন্ত তা বাহির করা যায়নি।
নির্মল পাল বলেন আজকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মাদ্রাসাছাত্রদের সাথে কিছু রাজনৈতিক দল এর লোকজন কেউ বৈঠক করতে দেখেছেন।
কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা ভিডিও - কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা video
আমাদের শেষ কথা
কুমিল্লায় কুরআন কে অবমাননা করা হয়েছে এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন তথ্য এখানে শেয়ার করেছি পবিত্র কোরআন শরীফ কে বা কারা রেখেছে মূর্তির পায় সেটা এখন পর্যন্ত জানা যায় নি। তবে আমাদের মত একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে তাদের এবং দায়িত্ব কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থের উপর আঘাত আনবে এবং তারা এগুলো চুপ করে দেখবে তা কিন্তু হয়না। তারপর দেখা যাক এ ঘটনায় পিসি কে বা কারা জড়িত। কারা কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রেখেছেন