পর্দা না করার শাস্তি অনেক ভয়াবহ -বেপর্দা নারির আজাব -ইসলামিক জিবন-ইসলাম বিশ্বজনীন এক চিরন্তন ও শাশ্বত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলামে রয়েছে নারীর সম্মান, মর্যাদা ও সকল অধিকারের স্বীকৃতি, রয়েছে তাদের সতীত্ব সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক কর্মসূচী। তাদের সম্মান, মর্যাদা ও সতীত্ব অক্ষুন্ন রাখতেই ইসলাম তাদের উপর আরোপ করেছে হিজাব বা পর্দা পালনের বিধান।
মূলত ‘হিজাব বা পর্দা’ নারীর সৌন্দর্য ও মর্যাদার প্রতীক। নারীর সতীত্ব ও ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচ। নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার অতি সহজ ও কার্যকর উপায়।
এ বিধান অনুসরণের মাধ্যমে হৃদয়-মনের পবিত্রতা অর্জন করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।’ (সূরা আহযাব: ৫৩)
ইসলাম পর্দা পালনের যে বিধান আরোপ করেছে তা মূলত অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসনের লক্ষ্যে এবং সামাজিক অনিষ্টতা ও ফেতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচার নিমিত্তেই করেছে। নারীদের প্রতি কোনো প্রকার অবিচার কিংবা বৈষম্য সৃষ্টির জন্য করেনি।
বরং তাদের পবিত্রতা ও সতীত্ব রক্ষার্থেই তাদের উপর এ বিধানের পূর্ণ অনুসরণ অপরিহার্য করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’ (সূরা আহযাব: ৩৩)
এ জন্য পর্দা-বিধান ইসলামী শরীয়তের পক্ষ থেকে সাধারণভাবে সমাজ-ব্যবস্থার এবং বিশেষভাবে উম্মতের নারীদের জন্য অনেক বড় ইহসান। এ বিধানটি মূলত ইসলামী শরীয়তের যথার্থতা, পূর্ণাঙ্গতা ও সর্বকালের জন্য অমোঘ বিধান হওয়ার এক প্রচ্ছন্ন দলিল।
মানবসমাজকে পবিত্র ও পঙ্কিলতামুক্ত রাখতে পর্দা বিধানের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে বর্তমান সমাজের যুবক ও তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা ও নারীজাতির নিরাপত্তার জন্য পর্দা-বিধানের পূর্ণ অনুসরণ এখন সময়ের দাবি।
পর্দা না করার শাস্তি অনেক ভয়াবহ -বেপর্দা নারির আজাব -ইসলামিক জিবন
"মেয়েদের সম্পর্কিত ১৫টি গুরুত্বপূর্ন হাদিসঃ-
🔘হাদিস নংঃ-০১
"দেবর মৃত্যু সমতুল্য।মৃত্যু থেকে মানুষ যেভাবে পলায়ন বা সতর্কতা অবলম্বন করে এক্ষেত্রে তাই করতে হবে।"
🔘হাদিস নংঃ-০২
"কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে মিলিত হলে নিঃসন্দেহে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান।"
🔘হাদিস নংঃ০৩
"তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো নাহ যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে কারণ,শয়তান তোমাদের রক্ত শিরায় প্রবাহিত হয়।"
🔘হাদিস নংঃ০৪
"কোন অবৈধ নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার পেরেক পুঁতে যাওয়া ভালো।"
🔘হাদিস নংঃ-০৫
"রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “দুই শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামের অধিবাসী যাদেরকে আমি দেখিনি। তারা ভবিষ্যতে আসবে। প্রথম শ্রেণী হবে একদল অত্যাচারী, যাদের সঙ্গে থাকবে গরুর লেজের মত চাবুক যার দ্বারা তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর দ্বিতীয় শ্রেণী হল সে নারীর দল, যারা কাপড় পরিধান করবে কিন্তু তবুও তারা উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে, নিজেরা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট এবং অন্যদেরকেও তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে, যাদের মস্তক (খোঁপা বাধার কারণে) উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তার গন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও পাওয়া যাবে।”
🔘হাদিস নংঃ-০৬
"রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের বাহিরে দেখতে পান যে, নারীরা রাস্তায় পুরুষের সাথে মিশে গেছেন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের বলেন, তোমরা অপেক্ষা কর, কারণ, তোমাদের জন্য রাস্তার মাঝে হাটা উচিত নয়, তোমাদের জন্য হল রাস্তার পাশ। এ কথা শোনে নারী দেয়াল ঘেঁসে হাটা শুরু করে তখন দেখা গেল তাদের অনেকের কাপড় দেয়ালের সাথে মিশে যেত।"
🔘হাদিস নংঃ-০৭
"কোন মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকিনী সফর না করে, তার নিকট যেন মাহরাম ছাড়া কোনো বেগানা পুরুষ প্রবেশ না করে, এ কথা শোনে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি অমুক অমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সৈন্য দলে নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন এখন আমি কি করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উত্তর দিলেন তুমি তার সাথে বের হও।"
🔘হাদিস নংঃ০৮
"নারী গোপন জিনিস,সুতরাং যখন সে(বাড়ি হতে) বের হয়,তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে রমণীয় করে দেখায়।"
🔘হাদিস নংঃ০৯
"রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন যে, “আমরা যেন মহিলাদের নিকট তাদের স্বামীদের বিনা অনুমতিতে গমন না করি।”
🔘হাদিস নংঃ-১০
"প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর নারী যদি সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে পার হয়ে যায় তাহলে সে এক বেশ্যা। এমন কি এই অবস্থায় নামাযের জন্য যেতেও নিষিদ্ধ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যায়, সেই মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোনো নামায কবুল হবে না।”
🔘হাদিস নংঃ-১১
"আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি, দুই কানের ব্যভিচার হল শ্রবণ, মুখের ব্যাভিচার হল কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হল খারাপ উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া। আর অন্তর আশা ও আকাঙ্ক্ষা করতে থাকে। লজ্জা স্থান তাকে বাস্তবায়ন করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।"
🔘হাদিস নংঃ-১২
"যে নারী স্বগৃহ,স্বামীগৃহ বা মায়ের বাড়ি ছাড়া অন্য স্থানে নিজের পর্দা রাখে (কাপড় খোলে) সে তার ও তার রবের মধ্যকার পর্দা ও লজ্জাশীলতাকে বিদীর্ণ করে দেয়।"
🔘হাদিস নংঃ-১৩
"কোন নারীর উপর তোমার দৃষ্টি পড়লে তার প্রতি বারবার দৃষ্টিপাত করো নাহ বরং নজর অতিসত্তর ফিরিয়ে নিও কারণ, তোমার জন্য প্রথমবার ক্ষমা, দ্বিতীয়বার নয়।"
🔘হাদিস নংঃ-১৪
"নারীদের বেশ ধারী পুরুষের উপর অভিশাপ এবং পুরুষদের বেশ ধারিণী নারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ।
🔘হাদিস নংঃ-১৫
"যে নারী তার মাথায় এমন চুল বাড়তি লাগায় যা তার মাথার নয়,সে তার মাথায় জালিয়াতি সংযোগ করে।"
🔮ফুটনোট
১)বুখারী,৫২৩২,মুসলিম২১৭২,তিরমিযী,১১৭১
২) তিরমিযী,১১৭১
৩)তিরমিযী,১১৭২
৪)আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ,২২৬
৫)মুসলিম শরীফ,২১২৮
৬)আবু-দাউদ,৫২৭২
৭)বুখারী শরীফ,১৮৬২
৮)তিরমিযী শরীফ,১১৩৭
৯)তিরমিযী,২৭৭৯
১০)সহীহ আল-জামে আস-সগীর আযযিয়াদাতুহ,২৭০
১১)মুসলিম শরীফ,২৬৫৭
১২)তিরমিযী শরীফ,২৮০৩
১৩)আহমাদ শরীফ,১৩৬৯
১৪)সহীহ মুসলিম শরীফ,২৬৭৪,৬৮০৪
১৫)সহীহ আল-জামিউস সাগীর,২৭০৫